এম এস জিলানী আখনজী, চুনারুঘাট
একটি মানব সেবা মূলক অরাজনৈতিক সংগঠন “এ.কে ফাউন্ডেশন”, হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে বিনামূল্যে দিনব্যাপী চক্ষু শিবির মেডিকেল ক্যাম্পিং অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৬ মে) উপজেলার ১নং গাজীপুর ইউনিয়নের জারুলিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে “এ.কে. ফাউন্ডেশন উদ্যেগে ও প্রধান উপদেষ্টা ডুলনা ইয়াং স্টার সোসাইটি ও এ.কে ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান লন্ডন প্রবাসী ব্যারিস্টার আশরাফুল আলম চৌধুরীর সার্বিক সহযোগীতায় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত, ৩’জন অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা বিভিন্ন গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত ৮ শতাধিক রোগীদের মাঝে বিনামূল্যে দিনব্যাপী চক্ষু শিবির ক্যাম্পিং অনুষ্ঠিত হয়।
এতে গাজীপুর ইউনিয়নের আশপাশের দরিদ্র গ্রামবাসীর ৮০০ জনের অধীক রোগীর প্রাথমিক পরীক্ষা- নিরীক্ষার পর চোখের চিকিৎসা গ্রহণ করেন এবং ৪৪ জন ছানিপড়া রোগীর অপারেশনের জন্য বাছাই করা হয়। এবং ঔষধ প্রদান ও চশমা প্রদান করা হয়। এ পর্যন্ত এ সংগঠনের অধীনে প্রায় দুই হাজার থেকে ২২’শত রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয় এবং দেড় শতাধিক এর অধিক দরিদ্র গ্রামীণ রোগীর জন্য ক্যাটারাক্ট (এসআইসিএস) অপারেশনসহ লেন্স স্থাপন করা হয়।
এ.কে ফাউন্ডেশন’র সভাপতি মোঃ আবুল খায়ের চৌধুরী উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থেকে ফ্রি মেডিকেল চক্ষু শিবির ক্যাম্পিং চিকিৎসা সেবা’র উদ্বোধন করেন।
ইস্তেহাক চৌধুরী লিমানের পরিচালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন- গাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোঃ মীর সেলিম, উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাইফুল ইসলাম, জারুলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ বেলায়াত উল্লাহ, গেড়ারুক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলমগীর হোসেন, ঢাকা কলেজের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মীর রাসেল, মোঃ সাব্বির চৌধুরী, অনুপম চৌধুরী, ফাইম চৌধুরী ও মোঃ শেখ সুমনসহ এ.কে ফাউন্ডেশন সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ প্রমূখ।
এ.কে ফাউন্ডেশন সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা জানায়- লোকজন চিকিৎসা গ্রহণ করার পর যখন বলে আগে রাস্তাঘাট দেখতে পেতাম না, নামাজ পড়তে পারতাম না, এখন সব পারি তখন এক ধরনের তৃপ্তি কাজ করে। প্রতিবছর ৫০ থেকে ১’শত ছানিপড়া অপারেশনের রোগী এখানে চিকিৎসা গ্রহণ করে। এই কাজে উৎসাহ ও অর্থনৈতিক সাপোর্ট দেন লন্ডন প্রবাসী ব্যারিস্টার আশরাফুল আলম চৌধুরী। এই কাজ অব্যাহত থাকুক এই প্রত্যাশা করেন ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা। তারা আরো জানান- এ.কে. ফাউন্ডেশন প্রতি বছরের মতো এবারও বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছে। জারুলিয়া এলাকায় আয়োজিত এই ক্যাম্পে ৮’শত জনের অধীক রোগীকে চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিভিন্ন মানবিক ও সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আসছে।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা, লন্ডনপ্রবাসী ব্যারিস্টার আশরাফুল আলম চৌধুরী- প্রবাসে থেকেও তাঁর জন্মভূমির মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর দিক-নির্দেশনা ও সহযোগিতায় ফাউন্ডেশনটি ধারাবাহিকভাবে মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করে চলেছে। এ.কে. ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম ইতোমধ্যে লোকজনের মধ্যে প্রশংসিত হয়েছে এবং যা স্থানীয় পর্যায়ে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য যে, গতবছর এ.কে. ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ৬০০ জন চক্ষু রোগীকে দেখা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে ৬৪ জন ছানিপড়া রোগীর অপারেশন, চশমা ও ওষুধ বিনামূল্যে প্রদান করা হয়েছে মৌলভীবাজার বি.এন.এস.বি চক্ষু হাসপাতালের মাধ্যমে। শীতকালীন সময়ে ৫’শত’র বেশি কর্মজীবি, দিনমজুর, আসহায় ও হতদরিদ্রসহ সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ এবং মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফুটবল, ব্যাট ও বল বিতরণ সবই এ.কে. ফাউন্ডেশনের মানবহিতৈষী কার্যক্রমের অংশ। এছাড়াও, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ বিতরণসহ নানা সামাজিক সহায়তা কার্যক্রম ফাউন্ডেশনটি নিয়মিতভাবে পরিচালনা করে আসছে, বিশেষ করে চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নে।
Leave a Reply